Model Activity Task Class 10 Part 1 History (চুয়াড় বিদ্রোহকে “চুয়াড় বিপ্লব” বলে কেন ভুল বলা হবে?0
Contents
Model Activity Task
Class 10
Sub:- History
Part 1

১। নিচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও : ( ৩ অথবা ৪টি বাক্যে)
(ক) স্মৃতিকথা কিভাবে ইতিহাসের উপাদান হিসেবে ব্যবহার হতে পারে উদাহরণসহ লেখ।
উত্তর : আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় যেসব উপাদান রয়েছে সেগুলোর মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হলো স্মৃতিকথামূলক রচনা। বিভিন্ন ব্যক্তি তাদের প্রত্যক্ষ করা বিভিন্ন ঘটনাবলী প্রসঙ্গক্রমে তাদের লেখা আত্মজীবনী ও স্মৃতিকথা মূলক রচনা উল্লেখ করে থাকেন। সরকারি নথিপত্রে উল্লেখ্য নেই এমন বহু ঘটনার উল্লেখ এসব রচনা থেকে পাওয়া যায়। এসব তথ্য আধুনিক ভারতের ইতিহাস রচনায় করতে বিশেষ সহায়তা করে।
(খ) বাংলার নবজাগরণ ছিল কলকাতা শহর কেন্দ্রিক – মন্তব্যটি বিশ্লেষণ কর।
উত্তর : উনিশ শতকের গোড়ায় বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি, ধর্ম, সমাজ প্রভৃতি ক্ষেত্রে এক নবচেতনার সূচনা হয় যা বাংলায় নবজাগরণ নামে পরিচিত। বাংলার নবজাগরণ মূলত কলকাতাকেন্দ্রিক ছিল, তাই তা সামগ্রিকভাবে সমস্ত বাংলায় ছড়িয়ে পড়তে পারেনি। তবে এই নবজাগরণ এর মাধ্যমে বাংলার ধর্ম ও সমাজে আধুনিকতার সঞ্চয় হয়েছিল।
(গ) চুয়াড় বিদ্রোহকে “চুয়াড় বিপ্লব” বলে কেন ভুল বলা হবে?
উত্তর : ‘বিপ্লব’ বলতে বোঝায় কোন প্রচলিত ব্যবস্থার দ্রুত ব্যাপক ও আমূল পরিবর্তন। কিন্তু চুয়াড় বিদ্রোহকে চুয়ার বিপ্লব বললেন কিছু কিছু ক্ষেত্রে ভুল হবে, কেননা –
প্রথমত, এই সংগ্রামে চুয়াড়দের জীবনধারায় কোন পরিবর্তন আনতে পারেনি।
দ্বিতীয়ত, বিদ্রোহের পর ইংরেজ সরকার জঙ্গলমহল নামে আলাদা প্রশাসনিক এলাকা করে দিলেও বহিরাগত জমিদার, ইজারাদার, মহাজন ইত্যাদির অত্যাচার থেকে মুক্ত হয়নি।
২। ভারতের মানচিত্রে নিম্নলিখিত স্থানগুলিতে করো ও নাম লেখ :
- সাঁওতাল বিদ্রোহের এলাকা
- ফরাজি আন্দোলনের কেন্দ্র
- কোল বিদ্রোহের এলাকা
- মুন্ডা বিদ্রোহের অঞ্চল
- সন্ন্যাসী ফকির বিদ্রোহের এলাকা
৩। উপযুক্ত তথ্য সহযোগে নিচের ছকটি পূরণ করো :
সাময়িক পত্র/সংবাদ পত্র /সাহিত্য | সম্পাদক | সময়কাল | বিষয়বস্তু |
বঙ্গদর্শন | বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় | ১৮৭২ খ্রিষ্টাব্দ | সমকালীন সময়ে ইংরেজ সরকার ও জমিদারের শোষণ ও অত্যাচার, সামাজিক পরিস্থিতি, সাধারণ মানুষের অবস্থা, সাহিত্য, রাজনীতি, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব প্রভৃতি বঙ্গদর্শন পত্রিকায় প্রকাশিত হতো। |
সোমপ্রকাশ | দ্বারকানাথ বিদ্যাভূষণ | ১৮৫৮ খ্রিষ্টাব্দ | সোমপ্রকাশ পত্রিকায় ব্রিটিশ শাসনের প্রায় 30 বছরের বিভিন্ন সংবাদ, তৎকালীন বাংলার সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থা প্রভৃতি বিষয়ে নানা তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। |
গ্রামবার্তা প্রকাশিকা | কাঙাল হরিনাথ মজুমদার | ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দ | গ্রামবার্তা প্রকাশিকা পত্রিকায় নীলকর জমিদার ও মহাজনদের অত্যাচারের বিবরণ, সাহিত্য, দর্শন, বিজ্ঞান ও বীরত্বগাথা প্রভৃতি বিষয়ে আলোচনা করা হতো। |
হুতোম প্যাঁচার নকশা | কালীপ্রসন্ন সিংহ | ১৮৬১ খ্রিষ্টাব্দ | হুতোম প্যাঁচার নকশা গ্রন্থের প্রথম ভাগে কলকাতার চড়কপার্বণ, বারোয়ারি পুজো, ছেলেধরা, খৃষ্টানী হুজুক, সাতপেয়ে গরু, দরিয়াই ঘোড়া, লখনৌ এর বাদশা, আর দ্বিতীয় ভাগে রথ, দুর্গোৎসব, রামলীলা প্রভৃতির আলোচনা রয়েছে। |
বামাবোধিনী | উমেশচন্দ্র দত্ত | ১৮৬৩ খ্রিষ্টাব্দ | বামাবোধিনী নামক মাসিক পত্রিকাটি বাংলার নারী সমাজের উন্নতির লক্ষ্যে এবং সেই সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার, শিক্ষার প্রসার, সমাজের প্রগতিশীলতা প্রভৃতি বিষয় বস্তু নিয়ে এই পত্রিকা শুরু হয়েছিল। |
৪। নির্ভুল তথ্য দিয়ে ফাঁকা ঘরগুলো পূরণ করো :
উত্তর :
বিদ্রোহ বা আন্দোলন | সময়কাল | অঞ্চল | নেতৃত্ব | কারণ | প্রভাব |
সাঁওতাল | ১৮৫৫-৫৬ | ছোটনাগপুর, পালামৌ, মালভূম, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, বীরভূম | সিধু ও কানু। | সাঁওতাল উপজাতির কৃষকরা ইংরেজ কোম্পানি ও তাদের সহযোগী জমিদার, মহাজন শোষণ ও অত্যাচারের শিকার হয় এই বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। | সাঁওতালদের ক্ষোভ নিম্নবর্গের হিন্দুদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তাছাড়া সরকার সাঁওতাল এলাকায় সুদের হার নির্দিষ্টভাবে বেঁধে যায় এবং সাঁওতালদের পৃথক উপজাতি হিসেবে ঘোষণা করে তাদের জন্য সাঁওতাল পরগনা জেলা গঠন করে দেয়। |
মুন্ডা | ১৮৯৯-৯০ | ছোটনাগপুর ও তার নিকটবর্তী অঞ্চল। | বিরসা মুন্ডা | মুন্ডা উপজাতি কৃষকরা ব্রিটিশ সরকার জমিদার মহাজন শোষণ ও অত্যাচারের শিকার মুন্ডা বিদ্রোহ হয়েছিল। | বিদ্রোহে অংশ নিয়ে মুন্ডাদের মধ্যে ঐক্য বৃদ্ধি পায়। তাছাড়া বিদ্রোহে চাপে সরকার ছোটনাগপুর টেন্যান্সি অ্যাক্টের দ্বারা মুন্ডাদের খুৎকাঠি প্রথা মেনে নেয়। |
নীল | ১৮৫৯-৬০ | নদীয়া, যশোহর, খুলনা, ফরিদপুর, মুর্শিদাবাদ, রাজশাহী, মালদহ, দিনাজপুর জেলায়। | দিগম্বর বিশ্বাস, বিষ্ণুচরন বিশ্বাস, মেঘাই সর্দার, মহেশ বন্দোপাধ্যায়, কাদের মোল্লা, রফিক মন্ডল, বৈদ্যনাথ সর্দার | নীলকর সাহেবদের চরম শোষণ ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে বাংলায় বিভিন্ন জেলায় চাষিরা নীলকরদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী বিদ্রোহ শুরু করেন। | সরকার অষ্টম আইন এর ধারা নীল চুক্তি আইন বাতিল বলে ঘোষণা করে এবং জানায় যে নীল চাষ সম্পূর্ণভাবে চাষীদের ইচ্ছাধীন। |
ওয়াহাবি | ১৮৩১ | ২৪ পরগনা, নদীয়া, যশোহর, মালদহ, রাজশাহী, ঢাকা | তিতুমীর | আরবের ধর্ম সংস্কারক আব্দুল ওয়াহাবের আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে ২৪ পরগনায় তিতুমীর বাংলার দরিদ্র, নির্যাতিত মুসলিমদের নিয়ে অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে ওয়াহাবি আন্দোলন নামে এক শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তোলে। | ব্রিটিশ সরকার জমিদার এবং নীলকরদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের উদ্দেশ্যে তিতুমীর নারকেলবেরিয়া গ্রামে বাঁশের কেল্লা তৈরি করে কিন্তু ব্রিটিশ কামান এই কেল্লা বুড়িয়ে দেয় এবং সবশেষে তিতুমীর যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ দেয়। |
ফরাজী | ১৮২০-৬০ | ফরিদপুর জেলায় | হাজী শরীয়তউল্লাহ, দুদুমিয়া, নোয়ামিয়া | ফরিদপুর জেলায় হাজী শরীয়ত উল্লাহ দরিদ্র জনগণকে নিয়ে অত্যাচারী জমিদারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। | এই আন্দোলন প্রথম দিকে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে পরিচালিত হলেও শেষ দিকে এই আন্দোলন রাজনৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়। |